মাসুদ রানা, রৌমারী: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার ইটভাটার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় শতাধিক একর জমির ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা। ফলে পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ রয়েছে। এদিকে জমিতে ফসল উৎপাদন করতে না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন জমির মালিকরা। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ঝগড়ারচর তেকানি গ্রামে ডিসি রাস্তার পূর্বপাশের নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশন হতো। ওই নালার ওপর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতা সফিয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করায় পানির নালাটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঝগড়ারচর এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে প্রায় শতাধিক একর জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষকরা। এ ছাড়া বৃষ্টি ও বন্যার পানি প্রবেশ করলেই ওই এলাকার জমির ওপর বন্যা মৌসুমে ৪/৫ হাত পর্যন্ত পানি জমে থাকে। পর্যায়ক্রমে দিনে দিনে পানি শুকিয়ে কার্তিক মাসে প্রায় দেড়-দুই হাতের মতো পানি জমে থাকে। ফলে সঠিক সময়ে সরিষা, আমন ও শাকসবজিসহ কোনো ফসলই উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে প্রতিবছর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এর হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দেন এলাকাবাসী। অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় একাধিক বার উপস্থাপন করাও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে ঝগড়ার চর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, ইটভাটা দেওয়ার আগে এখানকার পানি চতুর পাশ দিয়ে চলে যেত। ইটভাটা নির্মাণ করায় পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয় ইটভাটার মালিক সফিয়ার রহমান। এতে বছরে শুধু একটি ফসল ঘরে তুলতে পারি। আমরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমি স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা ও ইটভাটার মালিক সফিয়ার রহমান জলাবদ্ধতার কথা শিকার করে বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য নালার স্থানে পাইপ দেওয়া হয়েছে। এর পরেও যদি আরো প্রয়োজন হয় বড় পাইপ দেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানান, এখানে ইটভাটা নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশনের নালাটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কৃষকরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা নিরসনের দরকার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply